আমার ফেসবুকীয় আত্মজীবনী
২০১২ সাল। সবেমাত্র পলিটেকনিকে ক্লাস করা শুরু করেছি। ডিজিটাল দেশের সকল মডার্ন সুবিধা হতে বঞ্চিত। তখনও আমি ইন্টারনেটের সাথেই তেমন সংযুক্ত না। আমার ফোনে ডিফল্ট ওয়েবসাইট হিসেবে গুগল প্রিসেটআপ করা ছিল, বাট ভাল ভাবে গুগলেও ঢুকতে পারি না। কিচ্ছু বুঝি না তাই গুগলে ঢুকলেও বোরিং ফিল করি। হঠাত একদিন কিভাবে জানি অনেকগুলো ফুলের ছবি চলে আসলো। সেদিনই গুঁতাগুঁতি করতে করতে সার্চ দেয়া সম্পর্কে জেনেছিলাম। তার পর আমার অবস্থা পুরায় মখার মত। আমি গুগলে যা লিখে সার্চ দেয় তাই আসে। তখন আমি মনে মনে চিন্তা করতাম এটা আবার কেমন সিস্টেম যে যা লিখি তাই আসে! যাইহোক তখনও কিন্তু আমি google এই শব্দটা উচ্চারণ করাই শিখি নি। মাঝে মাঝে আমি তিন টাকা দিয়ে এক মেগাবাইট কিনতাম আর গুগলে ঢুকে নানান জিনিসের নাম লিখে সার্চ দিতাম।
হঠাৎ একদিন ক্লাসে এক ফ্রেন্ডের (বর্তমানে আমি তার ব্লক লিস্টে) কাছে ফেসবুক সম্পর্কে জানলাম। সে বলল আমি আমার ফ্রেন্ডদের কাছে কল না করে ফেসবুকে কন্টাক করি। আমি তারে জিগায়লাম এই ফেসবুক দিয়ে আর কি কি করা যায়? সে বলেছিল: বিদেশে ফ্রিতে কথা বলা যায়, বন্ধুদের সাথে কমিউনিকেট করা যায়, কুরান হাদিস বই পড়া যায়, মোস্ট কিউরিয়াস ম্যাটার মেয়েদের সাথে প্রেম করা যায় আরও অনেক কিছু। এসব শুনে আমি তো ফেসবুকের বিশাল অনুরাগী হয়ে গিয়েছিলাম। জানলাম যে, ফেসবুক মেগাবাইট দিয়ে চলে। আর ফেসবুক চালাতে হলে আগে একটা অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। তারপর মেসে এসে ফোন টিপতে টিপতে দেখি যে ফেসবুক নামে একটা অপশন আছে। হুট করে মেগাবাইট কিনে ঢুকে গেলাম ফেসবুকে। কিন্তু ফেসবুকে ঢুকে আমি কিছুই পেলাম না। ফেসবুকে ঢুকে যেটা দেখলাম সেটা হল তারা আমার নাম, বার্থডে, ফোন নাম্বার ইত্যাদি এসব চাচ্ছে। এতে আমার কিছুটা সন্দেহ হল ফেসবুকের প্রতি যে, আমার বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আমাকে হয়ত ফাঁসিয়ে দিবে।
যাইহোক, ফেসবুকে ঢোকার জন্য সব ফর্ম পূরণ করলাম বাট সাবমিট করলে কোনো কাজ হয় না। কীজন্যই জানি ভুল দেখায়। আমি আবার ভালমতো ইংরেজি উচ্চারণই করতে পারি না যার কারণে ওগুলা বুঝতাম না। যাইহোক কয়েকদিন ট্রাই করার পর কীভাবে যেন অ্যাকাউন্ট খুলে গেল। এরপর আমি গণহারে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠাতাম বিশেষ করে মেয়েদের দেখলেই রিকু দিতাম। একদিন দুইদিন এভাবে একদিন চ্যাট করা শিখে গেলাম। আমি তখন মনে করেছিলাম ফেসবুক দিয়ে মনেহয় শুধু চ্যাটই করা যায়। একটা মেয়ের সাথে আমি চ্যাট করতাম। সে ফেসবুকের অনেক কিছু জানত তাই মাঝে মাঝে তার হেল্প নিতাম।
হঠাত একদিন দেখি আমি আর আমার অ্যাকাউন্টে ঢুকতে পারছি না। একজনকে জিজ্ঞেস করলে সে বলল তোমার আইডি হ্যাক হয়ে গিয়েছে। আমি তারে আবার জিগায়লাম হ্যাক কি? সে বলল তোমার আইডি কেউ নষ্ট করে দিয়েছে তাই তোমাকে আবার নতুন আইডি খুলতে হবে। এতে আমি অনেক মর্মাহত হয়েছিলাম। যে মেয়েটার সাথে চ্যাট করতাম, তার কথা মনে হলে মনটা অনেক খারাপ হেয়ে যেত।
আবার নতুন আইডি খুলে ফেললাম। এবার খুব সতর্কতার সাথে চালাতাম যাতে আইডি কেউ হ্যাক করতে না পারে। তাই অপরিচিত কাউকে রিকু দিতাম না। অনেক খোঁজা খোঁজি করেও সেই মেয়েটিকে আর খুঁজে পাই নি, তাছাড়া তার নামটা পর্যন্ত আমি জানতাম না। সেটা ফেক আইডি ছিল। যাইহোক, কেউ যাতে আইডি না হ্যাক করতে না পারে সে জন্য ফেসবুকে কোথায় কি আছে তা জানা শুরু করলাম। ফেসবুকে অনেকেই ফটো আপলোড করতো কিন্তু আমি করতে পারতাম না। তাই ডিফল্ট অপেরা থেকে বেরিয়ে একটা নতুন অপেরা মিনি ডাউন-লোড করে নিলাম। এরপর খালি ফটো আপলোড দিতাম। কিন্তু কয়েক দিন পর পরই খালি আইডি ফটো ভেরি-ফাই হয়ে যেত। একটা আইডি মনের মত করে সাজাতে অনেক টাইম লাগে তাই কোনও আইডি নষ্ট হয়ে গেলে মেজাজ হট হয়ে যেত।
এরপর এক বছরের মধ্যেই আমাকে শতাধিক আইডি খুলতে ও হারাতে হল। অল্প দিনেই ফেসবুকের আনাচে কানাচের অনেক কিছুই জেনে গেলাম। যার কাছ থেকে ফেসবুক সম্পর্কে প্রথম জেনেছিলাম, কালের বিবর্তনে তাকেও অনেক কিছু শিখিয়েছি। রাজনীতিতে আমার আগ্রহ আগে বেশি ছিল যার কারণে আমার ফ্রেন্ডের সবাই লুলায়িত (মেয়েলী ব্যাপারে) স্ট্যাটাস পোস্ট করতো আর আমি রাজনৈতিক ক্ষোভ প্রকাশ করতাম। একারণে আমার অনেক কাছের ফ্রেন্ডও আমাকে ব্লক লিস্টে পাঠিয়েছে, এরমদ্ধে কেউ কেউ আবার দেখি আনব্লক করে দিয়েছে। অবশ্য এটা তারা নিজের সুবিধার্থেই করেছে। এখন আমি ইচ্ছে করলেই তাদেরকে আমার ব্লক লিস্টে ঢুকিয়ে দিতে পারি, কিন্তু আমি তো তাদের মত না আমি আমার মত। তাই আমার ব্লক লিস্টটা এখনো শুন্যই আছে। আসা করি ভবিষ্যতেও শূন্যই থাকবে। শুধু তাদের কর্মের কথা মনে হলে মাঝে মাঝে নিজেরই হাসি পাই। আসলেই আমরা সার্থপর। এমনকি আমার কোনও ফ্রেন্ড আছে যাদের সাথে আমি বাস্তবে দেখা হলে কথা বলি কিন্তু ভার্চুয়াল জগতে আমরা কেউ কাউকে চিনি না।
ফেসবুক যেমন আমাদেরকে অনেক আপগ্রেড করে দিয়েছে। তেমনি অনেক ক্ষেত্রে ডাউনগ্রেডও ক্করে দিয়েছে…।
ফেসবুকে আসার মূল উদ্দেশ্যটা এখন কিছুটা ঝাপসা হয়ে গেছে। তাই চেষ্টা করছি নিজেকে গুঁটিয়ে নিতে। তবে যুগের সাথে নিজেকে আপডেট করতে ফেসবুকের বিকল্প কিছু আমি দেখি না। এজন্য মাঝে মাঝে ঢু মারতেই হবে। ফেসবুক দিয়েই যেহেতু অনলাইনের যাত্রা শুরু, সেহেতু অনলাইনে টিকে থাকতে হলেঃ আমি ফেসবুককে ছাড়তে চাইলেও ফেসবুক আমাকে সহজেই ছাড়বে না।
হ্যাপি ফেসবুকিং……।।
হঠাৎ একদিন ক্লাসে এক ফ্রেন্ডের (বর্তমানে আমি তার ব্লক লিস্টে) কাছে ফেসবুক সম্পর্কে জানলাম। সে বলল আমি আমার ফ্রেন্ডদের কাছে কল না করে ফেসবুকে কন্টাক করি। আমি তারে জিগায়লাম এই ফেসবুক দিয়ে আর কি কি করা যায়? সে বলেছিল: বিদেশে ফ্রিতে কথা বলা যায়, বন্ধুদের সাথে কমিউনিকেট করা যায়, কুরান হাদিস বই পড়া যায়, মোস্ট কিউরিয়াস ম্যাটার মেয়েদের সাথে প্রেম করা যায় আরও অনেক কিছু। এসব শুনে আমি তো ফেসবুকের বিশাল অনুরাগী হয়ে গিয়েছিলাম। জানলাম যে, ফেসবুক মেগাবাইট দিয়ে চলে। আর ফেসবুক চালাতে হলে আগে একটা অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। তারপর মেসে এসে ফোন টিপতে টিপতে দেখি যে ফেসবুক নামে একটা অপশন আছে। হুট করে মেগাবাইট কিনে ঢুকে গেলাম ফেসবুকে। কিন্তু ফেসবুকে ঢুকে আমি কিছুই পেলাম না। ফেসবুকে ঢুকে যেটা দেখলাম সেটা হল তারা আমার নাম, বার্থডে, ফোন নাম্বার ইত্যাদি এসব চাচ্ছে। এতে আমার কিছুটা সন্দেহ হল ফেসবুকের প্রতি যে, আমার বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আমাকে হয়ত ফাঁসিয়ে দিবে।
যাইহোক, ফেসবুকে ঢোকার জন্য সব ফর্ম পূরণ করলাম বাট সাবমিট করলে কোনো কাজ হয় না। কীজন্যই জানি ভুল দেখায়। আমি আবার ভালমতো ইংরেজি উচ্চারণই করতে পারি না যার কারণে ওগুলা বুঝতাম না। যাইহোক কয়েকদিন ট্রাই করার পর কীভাবে যেন অ্যাকাউন্ট খুলে গেল। এরপর আমি গণহারে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠাতাম বিশেষ করে মেয়েদের দেখলেই রিকু দিতাম। একদিন দুইদিন এভাবে একদিন চ্যাট করা শিখে গেলাম। আমি তখন মনে করেছিলাম ফেসবুক দিয়ে মনেহয় শুধু চ্যাটই করা যায়। একটা মেয়ের সাথে আমি চ্যাট করতাম। সে ফেসবুকের অনেক কিছু জানত তাই মাঝে মাঝে তার হেল্প নিতাম।
হঠাত একদিন দেখি আমি আর আমার অ্যাকাউন্টে ঢুকতে পারছি না। একজনকে জিজ্ঞেস করলে সে বলল তোমার আইডি হ্যাক হয়ে গিয়েছে। আমি তারে আবার জিগায়লাম হ্যাক কি? সে বলল তোমার আইডি কেউ নষ্ট করে দিয়েছে তাই তোমাকে আবার নতুন আইডি খুলতে হবে। এতে আমি অনেক মর্মাহত হয়েছিলাম। যে মেয়েটার সাথে চ্যাট করতাম, তার কথা মনে হলে মনটা অনেক খারাপ হেয়ে যেত।
আবার নতুন আইডি খুলে ফেললাম। এবার খুব সতর্কতার সাথে চালাতাম যাতে আইডি কেউ হ্যাক করতে না পারে। তাই অপরিচিত কাউকে রিকু দিতাম না। অনেক খোঁজা খোঁজি করেও সেই মেয়েটিকে আর খুঁজে পাই নি, তাছাড়া তার নামটা পর্যন্ত আমি জানতাম না। সেটা ফেক আইডি ছিল। যাইহোক, কেউ যাতে আইডি না হ্যাক করতে না পারে সে জন্য ফেসবুকে কোথায় কি আছে তা জানা শুরু করলাম। ফেসবুকে অনেকেই ফটো আপলোড করতো কিন্তু আমি করতে পারতাম না। তাই ডিফল্ট অপেরা থেকে বেরিয়ে একটা নতুন অপেরা মিনি ডাউন-লোড করে নিলাম। এরপর খালি ফটো আপলোড দিতাম। কিন্তু কয়েক দিন পর পরই খালি আইডি ফটো ভেরি-ফাই হয়ে যেত। একটা আইডি মনের মত করে সাজাতে অনেক টাইম লাগে তাই কোনও আইডি নষ্ট হয়ে গেলে মেজাজ হট হয়ে যেত।
এরপর এক বছরের মধ্যেই আমাকে শতাধিক আইডি খুলতে ও হারাতে হল। অল্প দিনেই ফেসবুকের আনাচে কানাচের অনেক কিছুই জেনে গেলাম। যার কাছ থেকে ফেসবুক সম্পর্কে প্রথম জেনেছিলাম, কালের বিবর্তনে তাকেও অনেক কিছু শিখিয়েছি। রাজনীতিতে আমার আগ্রহ আগে বেশি ছিল যার কারণে আমার ফ্রেন্ডের সবাই লুলায়িত (মেয়েলী ব্যাপারে) স্ট্যাটাস পোস্ট করতো আর আমি রাজনৈতিক ক্ষোভ প্রকাশ করতাম। একারণে আমার অনেক কাছের ফ্রেন্ডও আমাকে ব্লক লিস্টে পাঠিয়েছে, এরমদ্ধে কেউ কেউ আবার দেখি আনব্লক করে দিয়েছে। অবশ্য এটা তারা নিজের সুবিধার্থেই করেছে। এখন আমি ইচ্ছে করলেই তাদেরকে আমার ব্লক লিস্টে ঢুকিয়ে দিতে পারি, কিন্তু আমি তো তাদের মত না আমি আমার মত। তাই আমার ব্লক লিস্টটা এখনো শুন্যই আছে। আসা করি ভবিষ্যতেও শূন্যই থাকবে। শুধু তাদের কর্মের কথা মনে হলে মাঝে মাঝে নিজেরই হাসি পাই। আসলেই আমরা সার্থপর। এমনকি আমার কোনও ফ্রেন্ড আছে যাদের সাথে আমি বাস্তবে দেখা হলে কথা বলি কিন্তু ভার্চুয়াল জগতে আমরা কেউ কাউকে চিনি না।
ফেসবুক যেমন আমাদেরকে অনেক আপগ্রেড করে দিয়েছে। তেমনি অনেক ক্ষেত্রে ডাউনগ্রেডও ক্করে দিয়েছে…।
ফেসবুকে আসার মূল উদ্দেশ্যটা এখন কিছুটা ঝাপসা হয়ে গেছে। তাই চেষ্টা করছি নিজেকে গুঁটিয়ে নিতে। তবে যুগের সাথে নিজেকে আপডেট করতে ফেসবুকের বিকল্প কিছু আমি দেখি না। এজন্য মাঝে মাঝে ঢু মারতেই হবে। ফেসবুক দিয়েই যেহেতু অনলাইনের যাত্রা শুরু, সেহেতু অনলাইনে টিকে থাকতে হলেঃ আমি ফেসবুককে ছাড়তে চাইলেও ফেসবুক আমাকে সহজেই ছাড়বে না।
হ্যাপি ফেসবুকিং……।।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url