মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কি

 আপনি যদি কোন প্রাণীর কামড়ে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কি? সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরী। যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করা হয় এবং মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কি? সে সম্পর্কে না জানা থাকে তাহলে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কি? তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কি? এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কি? তা জেনে নেওয়া যাক

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কি

মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কিঃ ভূমিকা

জলাতঙ্ক রোগ কুকুর অথবা অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যে থেকে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। সাধারণত এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ। ভাইরাস আক্রমণ করার ফলে এই রোগ হয়ে থাকে। প্রথমে এই ভাইরাস প্রাণীদের আক্রমণ করে থাকে এবং সেই প্রাণীদের কামড় অথবা আঁচড়ানোর কারণে জলাতঙ্ক কর রোগ মানুষকে সংক্রমণ করে থাকে।

আরো পড়ুনঃ ব্লাড ক্যান্সার হলে কি হয় - ১০ টি ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়

এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলে জলাতঙ্ক কি? জলাতঙ্ক রোগের কারণ, জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ, মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কি? এ বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আপনি যদি এই রোগে আক্রান্ত হন তাহলে অবশ্যই আপনার এই বিষয়গুলো জেনে নেওয়া উচিত।

জলাতঙ্ক কি?

সবার আগে আমাদেরকে জলাতঙ্ক কি? এই বিষয় সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। জলাতঙ্ক, যা হাইড্রোফোবিয়া নামেও পরিচিত। একটি তীব্র ভাইরাল সংক্রমণ যা প্রায় সবসময়ই মারাত্মক। এটি সংক্রামক রোগের বিভাগের অধীনে আসে এবং খামার বা বন্য প্রাণীদের দ্বারা সংক্রামিত হয়; সাধারণত মাংসাশী যেমন কুকুর, বিড়াল, শেয়াল, শকুন।

জলাতঙ্ক হল এক ধরনের ভাইরাসজনিত রোগ যা প্রাণীদের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে থাকে। রেবিজ ভাইরাস নামক এক ধরনের নিউরোট্রপিক ভাইরাস দিয়ে এই রোগ হয়। এই রোগ সাধারণত গৃহপালিত প্রাণী ও বন্য প্রাণীদের প্রথমে সংক্রমিত করে।

জলাতঙ্ক রোগের কারণ

জলাতঙ্ক কি? এ সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার পরে আমাদেরকে জলাতঙ্ক রোগের কারণ সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। কারণ আমরা যদি জলাতঙ্ক রোগের কারণ সম্পর্কে ধারণা রাখতে পারি তাহলে খুব সহজেই মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কি? তা জানতে পারবো। মানুষের মধ্যে জলাতঙ্ক একটি উন্মত্ত প্রাণীর কামড়ের কারণে হয়।

প্রাণীর লালার মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়ায়। খামারের প্রাণী যেমন কুকুর, গরু, ঘোড়া, ছাগল, খরগোশ এবং বন্য প্রাণী যেমন কাঁঠাল, বাদুড়, কোয়োটস, শিয়াল এবং হায়েনারা আক্রান্ত হলে জলাতঙ্ক ছড়াতে পারে।এই ভাইরাস প্রায় সকল স্তন্যপায়ী প্রাণীকেই আক্রান্ত করতে পারে তবে খুব অল্পসংখ্যক স্তন্যপায়ী মানুষের সংক্রমণের উৎস হিসেবে গুরুত্ব বহন করে।

মানুষ সাধারণত কুকুরের কামড়ের মাধ্যমে বেশি আক্রান্ত হয়। অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে বিড়াল, বাদুড়, ভোঁদড়, শেয়াল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। সাধারণত খরগোশ ও তীক্ষ্ণদন্তী প্রাণী যেমন, ইঁদুর, মূষিক, কাঠবিড়াল প্রভৃতির মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায় না। সাধারণত মানুষ থেকে মানুষে অঙ্গ ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ

জলাতঙ্ক রোগ নির্ণয় করার জন্য জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ সম্পর্কে ধারণা রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যদি জলাতঙ্ক রোগ আক্রান্ত করে তাহলে পায়ের তুলনায় মাথার দিকে কামড়ালে সুপ্তিকাল আরো কমে যায় কারণ ভাইরাসের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে পৌছাতে সময় কম লাগে।

আরো পড়ুনঃ টিউমার ভালো করার ৯ টি উপায়

  • প্রথমদিকে অনির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ যেমন জ্বর, ক্ষুধামন্দা, কামড় স্থানের অনুভূতিতে পরিবর্তন যেমন চিনচিন, ঝিনঝিন ইত্যাদি পরিলক্ষিত হয়।
  • কয়েকদিন পর থেকে তন্দ্রা, কনফিউশন, অনিয়ন্ত্রিত উত্তেজনা, লালারসের ক্ষরণ বৃদ্ধি প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়।
  • সবচেয়ে লক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে ঢোক গিলার সময় ডায়াফ্রাম, রেসপিরেটোরি মাসল ও কণ্ঠনালির তীব্র ব্যথাযুক্ত সংকোচন হয়।
  • বিশেষ করে পানি পান করার চেষ্টা করলে ডায়াফ্রাম ও অন্যান্য ইন্সপিরেটোরি মাসলের তীব্র সংকোচন ও ব্যথা হয় ফলে রোগীর মধ্য হাইড্রোফোবিয়া বা পানভীতি তৈরি হয়।

মরণব্যাধি জলাতঙ্ক রোগ থেকে বাঁচার উপায়

মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কি? তা উল্লেখ করা হলো। জলাতঙ্ক হলে পানি দেখলে আতঙ্ক হয় বলে মনে করা হয় তবে এসব রোগী পানি দেখে তখনই ভয় পায় যখন এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়। জলাতঙ্ক রোগী যখন পানি খেতে যায় তখন তার গলা ও শ্বাসনালী উত্তেজনায় সংকুচিত হয়ে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। যার ফলে তারা পানি দেখলে ভয় পেয়ে থাকে।

জলাতঙ্ক রোগের ভাইরাস ক্ষতস্থান থেকে খুব দ্রুত মস্তিষ্কের মধ্যে ছড়িয়ে যেতে পারে। যার ফলে রোগীর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পায়। তার মধ্যে অসংলগ্ন আচরণ, আবোল তাবোল কথাবার্তা, দৈনন্দিন কাজ করতে না পারা অতিরিক্ত উত্তেজনা শ্বাসকষ্ট এ ধরনের লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে। জলাতঙ্ক রোগের সব থেকে বিশেষত্ব হচ্ছে পশু কামড়ানোর পরেও এই রোগের টিকা দেওয়া যায়।

অন্যান্য যে কোন রোগের ক্ষেত্রে সাধারণত এটা প্রযোজ্য নয়। যেমন হেপাটাইটিস বি এর সংক্রমণ হওয়ার পর টিকা দিলে কোন ধরনের সুবিধা পাওয়া যায় না। কিন্তু জলাতঙ্কের ভাইরাসের সৃষ্টিকাল দীর্ঘ হলে পরবর্তীতে দেওয়া যায়। সাধারণত পূর্বে কুকুর কামড়ালে সেই কুকুরকে দশ দিন পর্যবেক্ষণ করতে হয় এবং দশ দিনের মধ্যে কুকুরটি মারা না গেলে টিকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই কিন্তু এটা সম্পূর্ণ একটি ভুল ধারণা।

এখন চিকিৎসকরা বলে থাকে কুকুর কামড়ানোর পরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকা দিতে হবে এবং চিকিৎসা শুরু করতে হবে। পূর্বে নাভিতে ১৪ টি ইনজেকশন দিতে হতো। এখন চারটি দিলেই হয়। কিন্তু কুকুর কামড়ানো ছাড়াও আগে থেকেই সতর্কতা হিসেবে ইঞ্জেকশন দেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে তিনটি ইনজেকশন দিলেই যথেষ্ট।

মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কিঃ উপসংহার

জলাতঙ্ক কি? জলাতঙ্ক রোগের কারণ, জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ, মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কি? মরণব্যাধি জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার উপায় কি? এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত।

আরো পড়ুনঃ প্রেসার লো হলে করণীয় ১৫ টি কাজ - প্রেসার লো এর ১৬ লক্ষণ

আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন। কারণ নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।২০৮৭৬

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url