সহবাসের কতক্ষণ পর ফরজ গোসল করতে হয়

 

সহবাসের কতক্ষণ পর ফরজ গোসল করতে হয় এই সম্পর্কে কি আপনি জানেন না কিন্তু জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আজ এই পোস্টে আমি সহবাসের কতক্ষণ পর ফরজ গোসল করতে হয় তার বিস্তারিত জানাবো। আপনারা যারা সহবাসের কতক্ষণ পর ফরজ গোসল করতে হয় জানেন না কিন্তু জানতে চান তারা পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

জানাবাত হল বীর্য নিঃসরণ বা যৌন মিলনের ফলে একটি অপবিত্রতা এবং যার উপর গোসল ফরজ হয়ে যায়। বীর্য নিঃসরণ এমন একটি জিনিস যা গোসল ফরয করে। এই ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে কোন পার্থক্য করা হয় না সে জেগে বা ঘুমিয়ে থাক। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক সহবাসের কতক্ষণ পর ফরজ গোসল করতে হয় বা করা যায়।

সূচিপত্রঃ সহবাসের কতক্ষণ পর ফরজ গোসল করতে হয়

জানাবাত অবস্থায় যে জিনিসগুলো করা হারাম

সহবাসের কতক্ষণ পর ফরজ গোসল করতে হয় জানেন আর সহবাসের পর কি কি কাজ করা যায় না। সহবাসের পর গোসল না করে কোরআনে কোনো অংশে স্পর্শ করা বা সর্বশক্তিমান আল্লাহর নাম যে ভাষায়ই হোক না কেন স্পর্শ করা হারাম। কারণ আল্লাহ নিজে পরিষ্কার পবিত্র তাই তিনি পরিষ্কার বান্দাদেরও পছন্দ করেন। সহবাসের পর বা জানাবাত অবস্থায় যে কাজ গুলো করা উচিত নয়-

  • নামাজ পড়ে আল্লাহর ইবাদাত করা
  • মসজিদ আল-হারাম বা মসজিদ আল-নবীতে প্রবেশ করা।
  • অন্য সব মসজিদে অবস্থান করা এবং একইভাবে ওয়াজিব সতর্কতার ভিত্তিতে মহান ইমামদের মাজারে অবস্থান করাও হারাম। তবে মসজিদ এর পাশ দিয়ে বা এক দরজা দিয়ে প্রবেশ করলে এবং অন্য দরজা দিয়ে বের হলে তাতে কোনো ক্ষতি নেই।
  • কোন কিছু উপরে তোলা বা কিছু রাখার নিয়তে মসজিদে প্রবেশ করা।
  • কোরানের আয়াত তিলাওয়াত করা

সহবাসের কতক্ষণ পর ফরজ গোসল করতে হয়

স্বামী স্ত্রী ফজর নামাজের পর সকালে যদি সহবাস করে তাহলে তাদের উচিত সর্বশেষে যোহরের নামাজের সময় শেষ হওয়ার আগে যথাসময়ে নামাজ পড়ার জন্য ফরজ গোসল করা। যেন নামাজ কাযা না হয়ে যায়। আবার একই ভাবে সন্ধ্যার সময় সহবাস করার পরে অবশ্যই একটি ফরজ গোসল করতে হবে নামাজের সময় শেষ হওয়ার আগে সময়মত নামাজ পড়ার জন্য।
যোহরের নামাজ পড়ার পর যদি কেউ সহবাস করে থাকে তবে যথাসময়ে আসরের সালাত আদায় করার জন্য তার অবিলম্বে ফরজ গোসল করা উচিত, তবে আছরের সময় শেষ হওয়ার আগে। দিন বা রাতের কোনও নির্দিষ্ট সময় নেই মানুষের যখন ইচ্ছা তারা সহবাস করতে পারে তবে সহবাসের জন্য ভাল হবে কিছু সময় হলঃ নির্দিষ্ট একটি রাতে যৌন মিলন করা যেমন সপ্তাহে ২ থেকে তিন দিন। তারপর সহবাস করে ফজরের নামাজের আগে তাদের ফরজ গোসল করে নিতে হবে। 

তাহলে সহবাসের কতক্ষণ পর ফরজ গোসল করতে হয় তা নামাজের সময়ের ওপর নির্ভর করে। নামাজ ছাড়াও যদিও সহবাসের পর গোসল না করে ঘরের কাজ করা পাপ নয় তাও উত্তম হল সহবাসের পর খুব তাড়াতাড়ি গোসল করে নেওয়া। আর সহবাসের পর গোসল করার সময় বিবেচনা করার প্রধান বিষয় হল যে এটি যেন নামাজের ক্ষতি না করে। নামাজ অবশ্যই যথাসময়ে করতে হবে এবং তা কাযা হয়ে যাবে না।

তবে মাঝখানে গোসল ছাড়া একাধিকবার সহবাস করা জায়েজ। যদিও একাধিক স্রাব হওয়া এবং শেষে গোসল করা ভালো বা উত্তম। যদি না হয় তবে প্রত্যেক বার বীর্যপাতের মাঝে অন্তত ওযু করতে হবে। তবে প্রত্যেক বার বীর্যপাতের মধ্যে গোসল বা ওযু না করলে কোন গুনাহ হবে না। সহবাসের পর ওযু ছাড়া ঘুমানোও জায়েজ আছে। এখান থেকে ভালো করে বোঝা যায় সহবাসের কতক্ষণ পর ফরজ গোসল করতে হয়।

তায়াম্মুম করার পদ্ধতি বা নিয়ম


যখন নামাজের সময় হয়ে যায় কিন্তু কোনো কারণে আপনার কাছে পানি নেই এবং নামাজের সময় চলে গেলেও পানি না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে তায়াম্মুম করা যায়। তায়াম্মুম করা আসলে খুবই সহজ বরং এটা ওযু করার চেয়ে সহজ। নিচে তায়াম্মুম করার নিয়ম দেখুনঃ
ধাপ ১ঃ তায়াম্মুম করার নিয়ত করুন ওযূ বা গোসলের মতো করে।

ধাপ ২ঃ যে বস্তুর উপর তায়াম্মুম করা জায়েজ তা হল মাটি, ধুলো, বালি বা পাথর। যে বস্তুর উপর তায়াম্মুম করা হচ্ছে তাতে উভয় হাত একত্রিত করে স্পর্শ করুন।

ধাপ ৩ঃ আপনার হাত উঠান এবং দুই হাত একত্রিত করুন যেমন একজন কুনুত করে তারপর তালুর গোড়া কপালে রাখুন। দুইটি হাত ভ্রু এবং নাকের ডগা থেকে নীচে ম্যাসাজ করুন, তারপরে কপালের ডানদিকে এবং তারপরে বাম দিকে হাতের তালু ঘুরিয়ে নিন। তারপরে হাতগুলিকে কপালের মাঝখানে আবার ফিরিয়ে আনুন এবং একসাথে নাকের ওপর ম্যাসাজ করুন।

ধাপ ৪ঃ ডান হাতটি ধরে রাখুন যাতে তালু নিচের দিকে থাকে, আঙ্গুল এবং বুড়ো আঙুল একসাথে থাকে এবং বুড়ো আঙ্গুলের নিচে আটকে না থাকে। তারপরে বাম হাতের পিছনের অংশটি কব্জির সামান্য উপরে রাখুন। ডান হাতের পিছনের পুরো অংশে সাবধানে বাম হাতটি ম্যাসাজ করুন। বাম হাতে একই পদ্ধতি অনুসরণ করুন কিন্তু আবার মাটিতে হাত দিতে হবে না।

তায়াম্মুম সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

ইচ্ছাকৃতভাবে বা ভুলে অথবা অজ্ঞতার কারণে যদি আপনি আপনার কপাল বা আপনার হাতের পিছনের সামান্য অংশও তায়াম্মুমে ছেড়ে দেন তবে আপনার তায়াম্মুম বাতিল হয়ে যাবে। তাই তায়াম্মুন করার সময় আপনার সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। তবে যদি কপাল এবং হাতের পিঠ মুছে ফেলা হয়েছে তা যথেষ্ট হবে৷
  • সতর্কতা হিসাবে মাথা ও হাত মুছার কাজটি উপর থেকে নিচ পর্যন্ত করতে হবে।
  • কপাল, হাতের তালু এবং হাতের পিছনের অংশ পবিত্র রাখা মুস্তাহাব।
  • তায়াম্মুম করার সময় আংটি খুলে ফেলতে হবে এবং কপাল বা হাতের তালুতে বা হাতের পিছনের যে কোন বাধা দূর করতে হবে।

সহবাসের কতক্ষণ পর ফরজ গোসল করতে হয় - শেষ কথা

সহবাসের পর এই গোসলকে শরিয়তের দৃষ্টিতে গোসল আল-জানাবা বলা হয়। সহবাস বা বীর্যপাতের পর ফরজ গোসল করা ওয়াজিব। এটি কুরআন ও সুন্নাহতে উল্লেখ করা হয়েছে। এই গোসলের উদ্দেশ্য হল শরীর পরিষ্কার করা এবং আত্মাকে পবিত্র করা। তবে এখানে প্রশ্ন হল সহবাসের কতক্ষণ পর ফরজ গোসল করতে হয়? 

এই গোসলের একটাই নিয়ম হল যখনই সহবাস করা হোক না কেন ৫ ওয়াক্ত নামাজের আগে গোসল করে ফেলতে হবে। এছাড়া এই অবস্থায় অন্যান্য ঘরের কাজ করতে পারবেন। তাহলে আশা করি সহবাসের কতক্ষণ পর ফরজ গোসল করতে হয় তা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন আজকের পোস্ট থেকে। ২২৪৯৮

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url