পেনশন হিসাব - সেনাবাহিনীর পেনশন হিসাব

 পেনশনঃ যদি সোজা ভাষায় বলি তাহলে পেনশন হলো একজন সরকারি চাকরিজীবী মানুষের তার চাকরি কালীন সময়ের সঞ্চিত অর্থ যা সরকারি আদেশ ও নির্দেশ মেনে তিনি প্রাপ্ত হয়ে থাকেন। এককালীন একটি বড় অর্থ ছাড়াও চাকরিজীবী ব্যাক্তি চাকরি ছাড়ার পরও মাসিক ভিত্তিতে পেনশন পেয়ে থাকেন।

আজকে আমরা শিক্ষকদের পেনশন নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করছি প্রিয় শিক্ষক মহোদয়গণ এবং যারা শিক্ষকদের পেনশন সম্পর্কে জানতে এসেছেন তারা অনেক কিছু পরিষ্কার হবেন। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে আলোচনা শুরু করা যাক–

শিক্ষকদের পেনশন

শুরুতেই যিনি অবসরপ্রাপ্ত হবেন সেই সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট অফিসে দাখিলের জন্য একমাস পূর্বেই উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে একটি  চিঠি প্রেরণ করা হয় ৷ দাখিল বা জমাকৃত যাবতীয় তথ্য শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী সামগ্রিক ভাবে যাচাই বাছাই করে উচ্চমান সহকারীর কাছে উপস্থাপন বা প্রেরণ করেন। উচ্চমান সহকারী তার যাবতীয় পর্যালোচনা শেষে  তা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকটে উপস্থাপন করেন।

এরপর উপজেলা শিক্ষা অফিসার তা আবারো যাচাই করেন এবং তা স্বাক্ষর করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করে থাকেন ৷ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পুনরায় যাচাই করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পেনশন মঞ্জুর করে মঞ্জুরীপত্র সংশ্লিষ্ট উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে  প্রেরণ করেন। এছাড়াও জেলা শিক্ষা অফিস মঞ্জুরীপত্রের এক কপি সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা অফিসে এবং এক কপি পেনশানারকে প্রেরণ করে থাকেন ৷ পরবর্তী সময়ে উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিস হতে উক্ত বিল পাস করে ব্যাংকে প্রেরণের মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের পেনশন সংক্রান্ত কার্যক্রম নিষ্পত্তি করা হয়ে থাকে।

উল্লেখ্য যে, পেনশন সংক্রান্ত সেবা গুলি বিনামূল্যে সম্পন্ন করা হয়ে থাকে।

সেবা প্রাপ্তির স্থানঃ সংশ্লিষ্ট উপজেলা/জেলা শিক্ষা অফিস।

দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা বৃন্দঃ

  •  জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস
  •  উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস
  •  উপজেলা/জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের অফিসার

সেবা প্রাপ্তির সময়কালঃ সাধারণত ১৫ ( পনেরো ) থেকে ২৮ ( আটাশ ) দিন পর্যন্ত সময় লেগে থাকে। ক্ষেত্র বিশেষে এর থেকে কিছুটা বেশী সময় লাগতে পারে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ "পিআরএল" এবং প্রচলিত যাবতীয় পদ্ধতি শেষ হবার পর উপজেলা শিক্ষা অফিসে নিম্নে উল্লেখিত কাগজ পত্র দাখিল করতে হবে–

  •  অবশ্যই নির্ধারিত ফরমে পেনশন প্রাপ্তির জন্য তিন কপি আবেদন পত্র দাখিল করতে হবে
  •  সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সত্যায়িত সনদপত্র দাখিল করতে হবে
  •   চাকরি সংক্রান্ত যাবতীয় বিবরণী দাখিল করতে হবে
  •  নিয়োগপত্র দাখিল করতে হবে
  •  পদন্নোতি প্রাপ্ত শিক্ষকগণকে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পদন্নোতি পত্র দাখিল করতে হবে
  •  প্রথমে উন্নয়ন খাতের চাকরি হয়ে থাকলে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সকল আদেশ কপি দাখিল করতে হবে
  •  সার্ভিস বই দাখিল করতে হবে
  •  ছয় কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি দাখিল করতে হবে
  •  নাগরিকত্ব সনদ দাখিল করতে হবে
  •  সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের হাতের পাঁচ আঙ্গুলের ছবি সংবলিত প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে
  •  নমুনা স্বাক্ষর দাখিল করতে হবে
  •  ব্যাংক হিসব নম্বর উল্লেখপূর্বক কাগজ দাখিল করতে হবে
  •  চাকরি স্থায়ীকরণ সংক্রান্ত আদেশ কপি দাখিল করতে হবে
  •  উত্তরাধিকারী নির্বাচনের সনদ দাখিল করতে হবে
  •  বিভাগীয় মামলা এবং অডিট আপত্তি নেই মর্মে সুস্পষ্ট লিখিত সনদ দাখিল করতে হবে
  •  "পিআরএল" এর আদেশ কপি দাখিল করতে হবে

সেবা প্রাপ্তির শর্তাবলিঃ

  •  অবশ্যই ত্রটিমুক্ত সার্ভিস বহি থাকতে হবে।
  •  চাকরি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সার্ভিস বহিতে যথাযথ ভাবে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে।
  •  হালফিল সার্ভিস বহি থাকতে হবে।
  •  অবশ্যই রাজস্বভুক্ত শিক্ষক হতে হবে।

পেনশনের হারঃ

  •  চাকরির বয়স পাঁচ বছর হলে মূলবেতনের একুশ পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স ছয় বছর হলে মূলবেতনের চব্বিশ পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স সাত বছর হলে মূলবেতনের সাতাইশ পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স আট বছর হলে মূলবেতনের ত্রিশ পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স নয় বছর হলে মূলবেতনের তেত্রিশ পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স দশ বছর হলে মূলবেতনের ছত্রিশ পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স এগারো বছর হলে মূলবেতনের উনচল্লিশ পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স বারো বছর হলে মূলবেতনের তেতাল্লিশ পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স তেরো বছর হলে মূলবেতনের সাতচল্লিশ পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স চৌদ্দ বছর হলে মূলবেতনের একপঞ্চাশ পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স পনের বছর হলে মূলবেতনের চুয়ান্ন পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স ষোল বছর হলে মূলবেতনের সাতান্ন পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স সতেরো বছর হলে মূলবেতনের তেষট্টি পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স আঠারো বছর হলে মূলবেতনের পয়ষট্টি পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স উনিশ বছর হলে মূলবেতনের উনসত্তর পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স বিশ বছর হলে মূলবেতনের বাহাত্তর পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স একুশ বছর হলে মূলবেতনের পচাত্তর পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স বাইশ বছর হলে মূলবেতনের উনআশি পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স তেইশ বছর হলে মূলবেতনের তিরাশি পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স চব্বিশ বছর হলে মূলবেতনের সাতাশি পার্সেন্ট হারে পাবেন
  •  চাকরির বয়স পঁচিশ বছর হলে মূলবেতনের নব্বই পার্সেন্ট হারে পাবেন

উল্লেখ যে, চাকরির বয়স পঁচিশ বছর বা তদোর্ধ্ব হলে মূলবেতনের নব্বই পার্সেন্ট হারে পেনশন পাবেন ।

আশা করছি পেনশন সম্পর্কে ও একজন শিক্ষকের পেনশন প্রাপ্তির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাবলী সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন। এরপরও যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে কমেন্ট করতে পারেন। আমরা যথাসম্ভব দ্রুত উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো। এছাড়াও আপনি আরো কি বিষয়ে জানতে চান তা লিখেও কমেন্ট করতে পারেন।

পাঠক আমরা নিয়মিত সরকারি-বেসরকারি ও অন্যান্য প্রকাশিত চাকরির বিজ্ঞপ্তি সংগ্রহ করে প্রকাশ করে থাকি। নিয়মিত সকল চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে আমদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার পরামর্শ রইলো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url